।। বাক্‌ ১১৬ ।। কামরুল ইসলাম







কামরুল ইসলামের তিনটি কবিতা


সীমাহীন বর্ষার রাতে

সংগীতের উপোল তেপায়ায় দুলছে রাত
গৃহিণীর চোখে-মুখে উদ্বাস্তু হাওয়ার ঝাপটা
গাছেরা কিছু মায়া তুলে ডাকছে দূরে-

জঙ্গলের সন্দেহ চোখে বাড়ি ফিরছে ক্লান্ত কোকিলের
পুরনো কুহু
সহস্র লতার শুভেচ্ছা মাখা এই সংগীতের নিচে দাঁড়িয়ে
আমরা দেখতে থাকি হাড়মিস্ত্রির সান্ধ্য কবর

পথ তুমি কেবলই ইশারা- একথা মনে রেখে
আমার উনুনে আমি লুকিয়ে রাখি আমারই ডানা
একদিন সীমাহীন বর্ষার রাতে দেখবো তা খুলে 


সাঁতার

জীবন চুঁইয়ে ঝরে পড়া এমত সাঁতারই
রেইনট্রির বর্ষসেরা র‍্যাম্পিং-
যে ঘুম ঘুমানো হয়নি, তার দিকে নড়ে উঠছে পুরনো সাঁকো
দূর থেকে কে যেন বলছে, আঁকো, এঁকে যাও সামান্য আদর
লাল পেড়ে শাড়ির আঁচলে, হৃদব্রাশে ভাসাও আকাশ-

অতঃপর সাঁকো-ভাঙা জলে তন্তুর বেজে ওঠার সময়
আমি কিংবা আমরা বুনো তরঙ্গের মানচিত্র ধরে
বসন্তের জঙ্গল চষে, ইথারে ইথারে হারানো পাখ-পাখালির
গানের ধ্বনির দিকে হাত বাড়াচ্ছি ,আর পাতালের
পিচ্ছিল ভূগোলে দেখে যাচ্ছি আদি সাম্যের ক্যাট-ওয়াক



সেই মাতাল দরজা

চুড়ি-ভাঙা পথ দেখে মনে হলো, বাড়ি ফিরছি-
আতাগাছের ছায়ায় তুমি ফেলে গেছ ভার্জিনিটি,
লজ্জার ভেতরে চাঁদ উঠছে পাতিলেবুর আখ্যান নিয়ে,
উড়ে যাওয়া ঘুঘুগণ আলোদের নিভে যাওয়া সংসারে
পড়ে যাচ্ছে বাঁশপাতার শীতল ব্যালাড,বাবলা তলার পুরনো শোক-

তুমি সেই মাতাল দরজা পেরিয়ে যাচ্ছো
যার মাথার ওপরে লেখা আছে সন্ধ্যা নামার ঠিকুজি, আর তরুণ
কাঁকড়াদের যৌন-সন্ত্রাসমাখা নতুন বিধি

সবকিছু নিভে যাবার আগে ভিজে যাবে সান্ধ্য ব্যাকরণ
আর সব সখের কুশলাদি রাজদণ্ডের  অপেক্ষায়
ভেঙে দেবে সবুজ মিতালি-এসবই আমাদের লালভাত
ভেজানো চন্দ্রিমা, অকালে ঝরে পড়া গায়নের রীতি-



ছবি Paul Sierra 




1 comment: