।। বাক্‌ ১১৬ ।। অভিষেক ঘোষ





অভিষেক ঘোষের দুটি কবিতা 


যেভাবে পালক ছাড়িয়েছ পাখির

শরতের সাদা হাওয়াকে আমার মুখ ঢেকে দিতে বলি
বলি এই মুখ আর তুলো না তুমি কোনও আকাশে
আজ বলতে বলতে যখন কালে চলে যাই,
ভুলে যাওয়া যায় না, ঠিক ছায়ার সুপ্ত পাশ ঘেঁষে
মাটির তলায় ডুবে যায় জল, আমি অবিকল কান্নার
মত মুখ করে, হেসে উঠতে পারি কাঠের ফুল বিছানো
শয্যায়, তক্তপোশে, পাপোশে ,মাদুরে...
ট্রেনের আওয়াজ সবাইকে ছটফট নাড়িয়ে দিয়ে যায়
হুটখোলা গাড়ি থেকে যে ধোঁয়া মিলিয়ে যায় দূরে,
তাকে ধরবে বলে কোনদূরেই তো গেলে না তুমি
মুখ গুঁজে থেকেছিলে, ছাইদানির নেভানো শত তারায়
চাল বাড়লে, শুধু খিদে বেড়ে যাওয়া হাড়ির পাশে
ভাঙা দাবার মাঠে, ছুটে চলে যাওয়া ঘোড়াকে দেখে,
তুমি থামতে বল... বল তোমার চাল তো মোটে
আড়াই...
আর একটু এগোলে তুমি বিলীনপ্রাণী,আরও একটুতে
লুপ্ত প্রায়, তার চেয়েও আরও আরও একটু তে,
যদি তোমাকেও হারায়
তবে কিছু বর্ণ আছে, যাদের রং নেই সাদা কালো
ঠোঁটে ফুলঝুরির আলোতে, ঠিকরে আসা গরম মোমের
তলায়,
তারাই তো তোমার জন্য
উল্কা থেকে আকাশ ছাড়ায়...


ফুটিনি তো কি হল

সে যখনই নিশ্চিন্ত থাকে, আমি তার মাথায় চিন্তা ছুঁড়ে দি
বাবুইয়ের বাসায় জোনাকির আলো নিভিয়ে, রাত আনি না।
এমনই অন্ধকার, যেন কেউ জানি না,
ফাটলের গর্ব বোধে, কেমনই ভেঙে যায় শক্ত ফলা
গুটি কয়েক ওঠার পরেই, যেভাবে ভেঙে পড়ে একশো তলা
সেই উপরের ছাদে বসে যে টেনে আনল মেঘ, চাঁদের পা থেকে  
তাকে বাবুইয়ের বাসায় এসে ছাড়লে, যদি বৃষ্টি দিয়ে শান্ত করে ডিম
গরম দিনে, আর যেন কিছুতেই ফুটে উঠতে নেই, ফুটন্ত মণি যখন...  
দু চার শীত এমনই চেপে চুপে নিজেকে ভিতরে আটকে রাখি  
তবে কম্বলের নীচে যে শুয়ে আছে,
তাকে নিয়েই, চিন্তা হয় এখন।   
            



7 comments:

  1. তোমার কবিতাগুলোকে একটা নদী মনে হয়, যার শাখা প্রশাখা নেই, কেবল অস্থির একটা পিপাসা নিয়ে ছিটকে ছিটকে চলা আছে।

    ReplyDelete
  2. "ফুটিনি তো কি হল" কবিতার নামকরণেই চমক আর কবিতাও দুর্দান্ত লাগল অভিষেক।

    ReplyDelete
  3. ।।বিস্ময় যেমন থাকে।। তেমনি চমকও চরম।।

    ReplyDelete
  4. দ্বিতীয় টি অসাধারণ।

    ReplyDelete
  5. ভীষণ ভাবে ছুঁয়ে গেল

    ReplyDelete