আমার ইতিহাস লেখা
১।
অন্ধকার বর্ণনা করছি। হে অন্ধকার, আমরা কিন্তু কেউ কারোর
হাত ধরছিনা
দিন আমাকে ঘুম পাড়িয়ে চলে গেল কোথাও। রাতে হয়তো
এক ঘুম চোখ, দুই ঘুম চোখ ; ঘুম ফুঁড়ে
কিছুটা দৃষ্টি মেলবে
মানুষের ঘুমের ইতিহাস যারা লেখেন
সরকারী দপ্তর থেকে তাদের জন্য ঘুম বরাদ্দ করা হয়
তাদেরই ফেলে দেওয়া কিছু ঘুম ; যেখানে–সেখানে
আমি কয়েকটা সামান্য জাগরণ লিখেছিলাম
যেখানে সামান্য, সেখানে অন্ধকার নেই; আলো, আলো, আরও আলো
তীব্র অসংখ্য আলো
দৃষ্টি ঝল্সে যায় ; আমি দুই চোখ বন্ধ করে
আমার নিজেরই ইতিহাস পড়তে থাকি
২।
মেগাস্থিনিসের ভ্রমণ-কাহিনী পড়তে হলে
খুব ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠতে হয়
চোখে ঘুম থাকলেও এটাই করতে হবে
কেননা একটু দেরী হলেই মেগাস্থিনিস বাথরুমে ঢুকে যাবেন
ফা-হিয়েন ফা-হিয়েন
; যতই বলো এটা কিন্তু একটা পাখির ডাকনাম
কিম্বা কোনও অবাক পাখির শুভডাকও হতে পারেয়
তুমি যখন ইতিহাসে এলে, তখন দরোজার সামনে
টাং টাং করে কাঁসার ঘণ্টা বাজাচ্ছিলো হিউ-এন-সাং
না, ভুল হলো, তিনি ঘণ্টার ধাতুরূপ বাজাচ্ছিলেন ; তখন
ঘণ্টার শব্দে অস্থির
পায়ে-হাঁটা পথের ইতিহাস কাঁপছিলো
কাঁসার ঘণ্টা না বাজলে ভালোবাসার কথা
ঠিকঠাক বোঝা যায় না
বন্ধ পৃষ্ঠার ভেতরে উঁকি দিয়ে আমি একবারই
তোমাকে দেখেছিলাম
বিজয় নয়, তুমি পরাজয়ের জন্য অপেক্ষা করছো
৩.
‘ইতিহাস বইয়ের পাতায় অন্তত একটি জোরালো হাসিমুখ চাই’
আমি বলেছিলাম ‘এটা আমার
একমাত্র দাবী’
মহাশূন্যের মাঝারে একটা রক্তমাখা
চাবি ঝুলছে
সেই চাবি দিয়ে একজন ঐতিহাসিক
পাতালের দরজা খুলবেন
বা খুলতে চায় ; কিম্বা খুলতে
পারে…
একজন প্রাচীন দাঁতাল হাজার
বছর ধরে
তার সঙ্গিনীর হারিয়ে-যাওয়া নাকছাবি
খুঁজে যাচ্ছে
আমার আরেকটি দাবী ; একটা হাতিমার্কা
ইতিহাসের লেখালিখি
এখান থেকেই শুরু হোক
৪.
তারপর মই নিয়ে অন্তত তিনটি
কবিতা লিখেছিলাম
লিখি, কাটাকুটি করি, ছিঁড়ে ফেলি
আবার লিখি
আর এরকম তো হতেই পারে
মই আছে। কিন্তু দ্যাখো,
একটি কবিতায়ও মা নেই
বেঁটে মানুষেরা পাতার পর’ পাতা দীর্ঘকায়দের
লাফ নিয়ে
ইতিহাস লেখে আর লম্বা মানুষেরা
সেই ইতিহাস মুখস্ত করে
এবং অন্ধকার
আকাশের
নিচে বসে জীবনব্যাপী পরীক্ষা
দেয়
মা হচ্ছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ
মই।
যদি ভালোবাসা থাকে, তবে মই বেয়ে
ওঠো, উঠতে থাকো
উঠতেই থাকো… যতক্ষন না
চাঁদের গায়ে
মাথা ঠেকে যায়
তারপর অবশ্য নেমে আসতেই পারো, এমনকি নিচে
নেমে
চাঁদের আলুথালু ইতিহাসও লিখতে
পারো
যে-ইতিহাসে মা থাকে, মা যে ইতিহাসে
থাকে
তার গায়ের জামা কখনও পুরোনো
হয় না
বিজয় জেঠুর কবিতাও কখনো পুরনো হয়না।
ReplyDeleteআমার প্রিয় কবিদের অন্যতম
ReplyDeleteআরও একবার মুগ্ধ হলাম বিজয়দা
ReplyDeleteআরও একবার মুগ্ধ হলাম বিজয়দা
ReplyDeleteভালো কবির পরিচয়
ReplyDeleteসুখপাঠ্য...
ReplyDelete